চাঁদপুর, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ২০ জিলকদ ১৪৪৪  |   ৩৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতি শিক্ষা স্বাস্থ্য সারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ১৭ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না করতে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সর্বোচ্চ চেষ্টা
  •   বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহীদের উদ্ভাবক হিসেবে তৈরি করতে হবে : জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান
  •   একদিনের ব্যবধানে ৪ মেয়ে শিশুর মৃত্যু : এবার আশিকাটিতে পুকুরে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু
  •   ফরিদগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ আটক তিন
  •   ২৮৬ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দিলো হাজীগঞ্জ পৌরসভা

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

রাতের আঁধারে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেন তিনি ॥ নামজারি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥

ভূমি অফিসের পিয়ন বা অফিস সহায়ক হলেও স্থানীয় লোকজন তাকে দিনের বেলা কখনোই অফিসে দেখেন না। কিন্তু নিয়মিত বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, রাতের আঁধারে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগটি মুখ্য নয়। বড় অভিযোগ হলো, তিনি কখনো চাঁদপুর, কখনো ফরিদগঞ্জ আবার কখনো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসেই করেন জমা খারিজের নামে জনগণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কাজ। ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী লোকজন তার বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ জানাতে শুরু করেছে।

অভিযোগের শিকার আবুল কাশেম ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত।

অভিযোগে জানা যায়, আবুল কাশেম অধিকাংশ সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমি অফিস ও চাঁদপুরের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতার সুযোগে বিভিন্ন এলাকার লোকজনের কাছ থেকে কাগজপত্র সংক্রান্ত ব্যাপারে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ। ফরিদগঞ্জ পৌর ও ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের লোকজনের কাছ থেকে অবৈধ টাকা লেনদেনের কারণে ২০২০ সালে তাকে গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করা হয়। কিন্তু সেখানে গিয়েও তার রমরমা বাণিজ্য থামেনি। তিনি কখনো নিজেকে বড় কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় প্রদান করে থাকেন। গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মাসে ২/৩ দিন এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর করে উঠিয়ে নিচ্ছেন মাসিক বেতন-ভাতাদি।

ভুক্তভোগী ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের আবুল কালাম জানান, গত ২০ মার্চ ২০২৩ তিনি আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত বছরের ১৫ নভেম্বর তিনি পৌর ভূমি অফিসে গেলে আবুল কাশেমের সাথে তার দেখা হয়। সে নিজেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দেয় এবং আমার জমির নামজারি খারিজ করার জন্য সে ৬ হাজার টাকা দাবি করে। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে তাকে ৬ হাজার টাকা দিই। ১৫ দিন পর আবুল কাশেম আমাকে মুঠোফোনে জানায়, আমার জমির খাজনা বাকি। খাজনা পরিশোধ করা ছাড়া নামজারি করা যাবে না। তখন সে খাজনার বকেয়া বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। তার কথামতো গত ৭ ডিসেম্বর অফিসের সামনে আমি তাকে ৫০ হাজার টাকা দিই, কিছুক্ষণ পরে সে আমাকে খাজনা দাখিলা কাগজ এনে দেয়। পরে বাড়ি এসে দাখিলাতে ১১ হাজার টাকা লেখা দেখে আমি তার কাছ থেকে বাকি টাকা দাবি করি। কিন্তু আবুল কাশেম বাকি টাকা আমাকে ফেরত দেবো বলে আজ পযর্ন্ত ফেরত দেয়নি।

সম্প্রতি গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ভূমি অফিসের অফিস সহকারী বিমলের কাছে আরো বেশ ক’জন ভুক্তভোগী আবুল কাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়েছেন। এদের কাছ থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমি নামজারি বাবদ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তাকে গত কদিন ধরে তারা খুঁজে পাচ্ছে না।

ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় এলাকাবাসী জাানান, আবুল কাশেমকে ৩ মাসের মধ্যে অফিসের আশেপাশেও দেখা যায়নি। মাসে ২/৩ বার গোপনে এসে পুরো মাসের হাজিরা খাতা স্বাক্ষর করে যায় সে।

অফিস সহায়ক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ৬নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ থাকার কারণে তাকে অফিসে কাজ করতে দিই না। ‘তার চাকরি আপনার ভূমি অফিসে, অফিসে না এসে কিভাবে সে বেতন উত্তোলন করে’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে পৌর সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, আমরা অভিযোগের ব্যাপারে জানতে পেরেছি।

অভিযোগের বিষয়ে আবুল কাশেমকে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুন্নাহার বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে জানতে পেরেছি। তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়