অঘোষিত পরিত্যক্ত ভবনের পাশে পরিত্যক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠালাভ করলেও জনবলের অভাবে এখন মৃতপ্রায়। একজন গ্রাজুয়েট চিকিৎসকের পোস্টিং থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রায় ৮ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। নতুন ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম চলে আসলেও চিকিৎসক না থাকার কারণে রোগীরা সরকারকে দোষারোপ করছে। অপরদিকে কয়েক বছর আগে পুরাতন ভবনের সংস্কার হওয়ার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার জানা নেই বলে জানালেও সংস্কার কাজের কমিটির সদস্য অহিদুজ্জামান পাটোয়ারী জানান, পুরাতন ভবনের সংস্কার করা সকল মালামাল ইতিমধ্যে চুরি কিংবা নষ্ট করে ফেলেছে স্থানীয় একটি চক্র ।
জানা যায়, এখানে সরকারিভাবে ৪টি পদের বিপরীতে ১ জন এমবিবিএস, ১ জন মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট, ১ জন ফার্মাসিস্ট আর ১ জন এমএলএলএস থাকার কথা। কিন্তু নিয়োগকৃত এমবিবিএস চিকিৎসক অনুপস্থিত রয়েছেন টানা ৮ বছর ধরে, মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট তাপস চন্দ্র দাস আসেন না অনেক দিন ধরে। নামেমাত্র দায়িত্ব পালন করছেন ফার্মাসিস্ট গোপাল দাস আর এমএলএসএস আঃ বারেক । মূলত এখন গোপাল দাস রোগীসেবা দিয়ে আসছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয়দের চিকিৎসাসেবা সহজতর করার লক্ষ্যে ষাটের দশকে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শ্রীপুর মজুমদার বাড়ির পূর্ব পাশে ও সাবেক ৩২ মৌজার চেয়ারম্যান মরহুম আবদুল হাই চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করে এটি। সেই থেকে এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। পুরাতন মূল ভবনটির উত্তর পাশে সাবেক এমপি এমএ মতিনের সহায়তায় নব্বইর দশকে নতুন ভবন তৈরি হয় আর সেখানেই বর্তমান সময় পর্যন্ত চিকিৎসা কার্যক্রম চলে আসছে।
সরজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর বাজার থেকে কানিরবাড়ির মাটির সড়কের পাশে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির পুরাতন ভবনটির উপর থেকে যেন লুটেরাদের নজর সরছে না। প্রতিদিন কোনো না কোনো সরকারি জিনিসপত্র চুরি হয়েই যাচ্ছে। এভাবে কয়েক মাসের মধ্যে ভবনটি পরিত্যক্ত ভবনে রুপান্তরিত হয়েছে। ঠিক পরিত্যক্ত ভবনের মতো এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিত্যক্তভাবে চলে আসছে বলে স্থানীয়রা জানান।
শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অহিদুজ্জামান পাটোয়ারী জানান, পুরাতন ভবনে বেশ কয়েক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি গভীর নলকূপ, পানির মোটর, পানির ট্যাংকি, দুটি টয়লেট, পুরো ভবনের ভেতর বৈদ্যুতিক লাইন বসানোসহ দরজা-জানালা লাগানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি ভবনের দরজা, জানালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। পানির মোটর, পানির ট্যাংকি নিয়ে গেছে একটি চক্র। একই চক্র ভবনের ভেতরের বৈদ্যুতিক লাইন ছিঁড়ে সুইচগুলো ভেঙ্গে রেখেছে, বাথরুমের বেসিন, দরজা আর কমোড ভেঙ্গে রেখেছে, নলকূপের উপরিভাগ নিয়ে গেছে। সর্বসাকুল্যে ভবনটিকে হাতে ধরে পরিত্যক্ত করে রেখেছে একটি চক্র।
শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও মজুমদার বাড়ির সরোয়ার আলম মজুমদার বলেন, এই হাসপাতালে (শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র) ৪টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ জন। এর মধ্যে এমএলএসএস আঃ বারেক আর ফার্মাসিস্ট গোপাল দাস প্রতিদিন এসে কয়েক ঘন্টা থেকে আবার চলে যান। জানা মতে, ১ জন এমবিবিএস চিকিৎসক আর ১ জন মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু কখনো কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক আর মেডিকেল অ্যাসিসটেন্টকে আসতে দেখিনি।
স্থানীয় মোরশেদ আলম মজুমদার লিটন ও হেকিম জুয়েল পাটোয়ারী জানান, সরকারি ঔষধের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, কিন্তু চিকিৎসক না থাকার কারণে সরকারের বদনাম হচ্ছে। যে দুজন এখানে বর্তমানে আছেন তারা ২/১ ঘন্টা কাজ করে চলে যান। তাই রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না।
পুরাতন ভবনের সংস্কার আর ভবনের মালামাল কেউ নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা না বলে এমবিবিএস চিকিৎসকের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আনোয়ারুল আজিম জানান, ২০১০ সাল থেকে শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া আছে। সেই চিকিৎসকের অনুপস্থিতির ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। সেই চিঠির আলোকে মন্ত্রণালয় এই পোস্ট শূন্য দেখালে নতুন চিকিৎসক নেবার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ফজর | ৪:১৯ |
যোহর | ১১:৫৯ |
আসর | ৪:৩১ |
মাগরিব | ৬:২৩ |
এশা | ৭:৩৮ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৪১-সূরা হা-মীম আস্সাজদাহ,
মহৎ আত্মাগুলি নীরবতায় ভোগে বেশি।
রাসূলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন, নামাজ আমার নয়নের মনি। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৬,৪৪,৪৩৯ | ১৩,২১,৯৪,৪৪৭ |
সুস্থ | ৫,৫৫,৪১৪ | ১০,৬৪,২৬,৮২২ |
মৃত্যু | ৯,৩১৮ | ২৮,৬৯,৩৬৯ |
দেশ | ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |